মোবাইল ফোন ছাত্রজীবনে ব্যবহারের সুফল এবং কুফল

প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমরা মোবাইল ব্যবহার করা নিয়ে চিন্তিত যে, মোবাইল ফোন ছাত্রজীবনে ব্যবহারের সুফল এবং কুফল সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহী, মোবাইল কিনার আগে এ বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনা হচ্ছে। তাহলে এবার সঠিক জায়গায় এসেছে, দেখে নাও ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল এবং কুফল দিকগুলো।

মোবাইল ফোন ছাত্রজীবনে ব্যবহারের সুফল এবং কুফল

আমি আজকে এই প্রতিবেদনে মোবাইল ফোন ছাত্রজীবনে ব্যবহারের সুফল এবং কুফল সমূহ এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করেছি। প্রতিবেদনটির শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকো বিস্তারিত জানতে পারবে।

ভূমিকা

২১ শতাব্দীর এই আজকের যুগে মোবাইল ফোন কে না ব্যবহার করে? কিন্তু তুলনামূলকভাবে এ মোবাইল ফোন ছাত্র জীবনে যেমন অনেক বেশি ভূমিকা রাখে তেমনি অনেক ছাত্রের জীবন নষ্টের কারণ এই মোবাইল ফোন। কিন্তু বর্তমান সমাজ ছাত্রদের এই মোবাইল ফোন ব্যবহারকে জীবন নষ্টের হাতিয়ার মনে করে।এর কারণ কি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি? না এর কারণ তাদের মোবাইল ফোন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান এবং ধ্যান ধারণার অভাব। তো চলুন ছাত্র জীবনের মোবাইল ফোন ব্যবহারের কিছু সুফল জেনে নেওয়া যাক।

ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল সমূহ

মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেকগুলো উপকারী এবং ক্ষতিকর দিক রয়েছে। আমরা ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল এবং ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে কিছু আলোচনা করার চেষ্টা করব। ক্ষতিকর দিকগুলো আলোচনার করার পূর্বে আমরা জেনে নিই, ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল দিক সমূহ গুলো-

পাঠ পুনরাবৃত্তি

যদি কোন ছাত্র কোন কারণে তার ক্লাস করতে সমর্থ্য না হয় তাহলে সে মোবাইল ফোন দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজেই সে ক্লাসটি পেতে পারে। শুধু তাই নয়, সে চাইলে একটি ক্লাস একাধিকবার দেখতে পারে, এতে তার পাঠ সংক্রান্ত অনেক সমস্যায় দূর হয়ে যাবে।

পাঠ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান

এখনকার যুগে অনেক ছাত্র ক্লাস করা ছাড়াও অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব কাজ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করে থাকে। এতে তাদের সময় ও অর্থ দুটোরই সাশ্রয় হয়। এটি এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে একজন ছাত্র নিজেই নিজের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করতে পারে এবং আত্মনির্ভরশীল হতে পারে।

বিভিন্ন পরীক্ষায় আবেদন

অনলাইন মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় আবেদন করা যায় এবং অনলাইন মাধ্যমে সে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যায়। শুধু প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাতেই নয়, নিজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও বোর্ড পরীক্ষার ক্ষেত্রে নিজের আবেদন নিজেই করতে পারবে।

অনলাইন ক্লাস

মাত্র সরাসরি ক্লাসে উপস্থিত না থেকেও অনলাইন নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে ঢুকে তার ক্লাস গুলো সম্পন্ন করতে পারে। এটি তার সময় বাঁচায় এবং পড়া তৈরি করার ক্ষেত্রে অনেক সময় দেয়।

ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে কিছু ভুল ধারণা

ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন ব্যবহারের গুরুত্ব অবশ্যই আছে এবং তার সাথে আছে এর কিছু অপব্যবহার। কিন্তু এর ব্যবহার নিয়েও আমাদের মাঝে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে নিচে সেই বিষয় নিয়ে কিছু আলোচনা করা হল:

মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি

আমাদের স্বীকার করতে হয় যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ আবিষ্কার সুতরাং এর প্রতি আকর্ষণ থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করা ছাত্রদের দায়িত্ব।

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার

একজন ছাত্র ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে তার মানে এই নয় যেখানে মোবাইল ফোন খারাপ, বরং মোবাইল ফোন ব্যবহারে যে আসক্তি ছাত্রটির হয়ে গেছে সেটাতে দোষ। কিন্তু আমাদের সমাজ এনে এ বিষয়ে কিছু উদ্ভট ধারণা রাখে যেটা খুবই আফসোসের বিষয়।

মোবাইল ফোন ব্যবহারের কুফল সমূহ

মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যেরকম সুফল রয়েছে এর অপব্যবহার করলে তার উল্টোটি রয়েছে অর্থাৎ এর অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। নিম্নে কিছু উল্লেখযোগ্য খারাপ বা কুফল দিকসমূহ উল্লেখ করা হল।

ব্রেনের ক্ষতি

মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার করলে বা মোবাইলের প্রতি বেশি আসক্ত হলে ব্রেনের ক্ষতি করে। ব্রেনের চেয়ে কোষ রয়েছে তা ধীরে ধীরে ক্ষতির দিকে অবসর হয় বিশেষ করে চোখের ক্ষতিটা তুলনামূলক বেশি হয়। ছাত্র জীবনে অর্থাৎ ক্লাস টেন এর নিচে পড়ুয়া ছাত্রদের কখনোই অতিরিক্ত ফল ব্যবহার করা উচিত নয়।

সময়ের অপচয়

অতিরিক্ত মোবাইল ফোনে আসক্ত হলে প্রয়োজনীয় পড়াশোনা ক্ষেত্রে অমনোযোগী হয়ে পড়ে এবং পড়াশোনার সময়ে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ফলে পড়াশোনা করার জন্য সময় পাইনা। মোবাইল ফোনে আনন্দ করা বাদ দিয়ে কখনো একটা ছাত্র পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারে না। আর এই জন্যই অল্প বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই মোবাইল ব্যবহার না করাই উচিত।

সামাজিকতার অভাব

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে অল্প বয়সী ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন সামাজিকতা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়, কারণ তারা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান এবং লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করার চেয়ে মোবাইল ফোনে ইনজয় করতে বেশি পছন্দ করে, এর ফলে সামাজিকতার ক্ষেত্রে অনেকটাই ঘাটতি রয়ে যায়।

গেম খেলা

ছাত্র জীবনে মোবাইল ব্যবহার করলে উপকারী দিকগুলো চেয়ে ক্ষতিকর দিকগুলোর প্রতি ঝুঁকি বেশি থাকে যেমন গেম খেলা ইউটিউব দেখা ফেসবুক দেখা ইত্যাদি শিক্ষানীয় বিষয়গুলোর চেয়ে ইনজয় করার দিকগুলোর প্রতি তুলনামূলক বেশি থাকে। তাই ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন তথা স্মার্টফোন ব্যবহার পরিমিত করা দিকে বিশেষ নজর রাখা উচিত।

মন্তব্য

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, মোবাইল ফোন ব্যবহারের অনেক উপকারী দিক রয়েছে ঠিক তেমনি অনেক ক্ষতিকর দিত রয়েছে। ছাত্রদের ক্ষেত্রে তার অভিভাবকের দৃষ্টি রাখা উচিত তার ছেলেমেয়েরা মোবাইল ফোনে ক্ষতিকর দিকের প্রতি বেশি আসক্ত নাকি তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। অভিভাবকের পাশাপাশি শিক্ষকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনলে মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কিত বিষয় ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বেশি অবগত করানো হলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
1 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • Anonymous
    Anonymous September 10, 2025 at 9:29 PM

    Thank you 😊

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Hasi Online IT নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url