বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থার বিস্তারিত বর্ণনা (River System of Bangladesh)

প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থার বিস্তারিত বর্ণনা সম্পর্কে আনার জন্য খুবই আগ্রহ্‌ আগ্রহী, এ বিষয়ে বিভিন্ন বই পুস্ত ঘাটাঘাটি এবং ওয়েবসাইট ভিজিট করেও সঠিক ও মনের মত তথ্য পাচ্ছেন না? তাহলে আপনার জন্য এই প্রতিবেদনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থার বিস্তারিত বর্ণনা (River System of Bangladesh)

আজকের এই প্রতিবেদনে খুব সহজ ও সাবলীল ভাষায় বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থার বিস্তারিত বর্ণনা প্রদান করতে গিয়ে -উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় নদী ব্যবস্থা (Northwest Region River System), দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বা গাঙ্গেয় নদী ব্যবস্থা (Southwest Region River System), ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী ব্যবস্থা (Brahmaputra-Jamun River System), সুরমা-মেঘনা নদী ব্যবস্থা (Surma-Meghna River System), পাহাড়ী নদী ব্যবস্থা (Hillstax River System) সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। চলুন এবার বিস্তারিত দেখে নিই।

ভূমিকা

বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও জীবনযাত্রার উপর নদী নালার একটি প্রভাব রয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশের প্রায় ৭০০টি নদী রয়েছে, যা মানুষের জীবনযাত্রার উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। তবে দেশের অনেক নদী চরম ন্যাব্যতা সংকটের কারণে মৃত প্রায় নদীতে পরিণত হয়েছে। সাধারণত নদীগুলো দক্ষিণবাহী। তবে বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের তথ্যমতে দেশের ৪০৫টি নদী রয়েছে। প্রধান নদী গুলো অপেক্ষাকৃত ছোট নদীতে পানি সরবরাহ করে, যে পানি চাষাবাদ ও জল পথকে নাব্য রাখতে সাহায্য করে।

নদী থেকে পর্যাপ্ত মাছ ধরা হয় যা দেশের আমিষের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হয়। প্রায় প্রতিবছর বিভিন্ন নদীর অববাহিকায় বন্যা দেখা যায়। বন্যার ফলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়, তবে বন্যার ফলে কৃষি জমিতে প্রচুর পরিমাণে নতুন পলি সঞ্চিত হয় যা জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি দেশের নদীগুলো বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বঙ্গোপসাগরে নিষ্কাশিত হতে সাহায্য করে। সুতরাং নদীমাতৃক বাংলাদেশের সম্মিলিত একক নদী ব্যবস্থা একদিকে সম্পদ আবার অন্যদিকে বৃহৎ আকারে দুর্যোগ সৃষ্টির নিয়ামক হিসাবে কাজ করে থাকে।

বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থা (River System of Bangladesh)

যেকোনো ভৌগলিক এককে নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাওর নিয়ে স্বতন্ত্র নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। বাংলাদেশের সর্বত্র নদী জালের ন্যায় বিন্যস্ত। সাধারণত দেশের প্রায় সব নদী দক্ষিণমুখী। এর কারণ, ভূমির ঢাল উত্তর থেকে দক্ষিনে দিকে ক্রমশঃ নিচু। একটি নদীর উপর অপর একটি নদীর সাথে মিলিত হলে প্রথম নদীটিকে শেষ নদীর উপনদী হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। আবার একটি নদী থেকে অন্য একটি নদীর সৃষ্টি হলে নতুন সৃষ্ট নদীটিকে মূল নদীর শাখা নদী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পদ্মার শাখা নদী গড়াই, আড়িয়াল খা, চন্দনা প্রভৃতি এবং উপনদী মহানন্দা। নিম্নে বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থা গুলো কয়েকটি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা হলো-

১। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় নদী ব্যবস্থা (Northwest Region River System)
২। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বা গাঙ্গেয় নদী ব্যবস্থা (Southwest Region River System)
৩। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী ব্যবস্থা (Brahmaputra-Jamun River System)
৪। সুরমা-মেঘনা নদী ব্যবস্থা (Surma-Meghna River System)
৫। পাহাড়ী নদী ব্যবস্থা (Hillstax River System)
চলুন এগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্যগুলো জেনে নিই-

১। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় নদী ব্যবস্থা (Northwest Region River System)

অতীতে উত্তরবঙ্গের নদীগুলো বেশ নব্য ছিল কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ নদী বেশ শীর্ণ ও স্রোতহীন হয়ে পড়েছে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে অত্র এলাকার নদীগুলো নাব্যতা হারাতে থাকে। অত্র এলাকার প্রধান প্রধান নদীগুলো হল- তিস্তা, করতোয়া, ছোট যমুনা, আত্রাই, পুর্নভবা, বাঙালি প্রভৃতি।

তিস্তা নদী

তিস্তা উত্তরবঙ্গের একটি প্রধান নদী। ১৭৮৭ সালের দিকে এক ভূ-আন্দোলনের মাধ্যমে এই নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায়। এ নদী থেকে করতোয়া, আত্রাই ও যমুনেশ্বরী নদী উৎপত্তি লাভ করেছে। তিস্তা চিলমারির কাছে ব্রহ্মপুত্র নদে পতিত হয়েছে।

করোতোয়া নদী

এটি বহ্মপুত্র নদের একটি উল্লেখযোগ্য উপনদী। স্থানীয়ভাবে এই নদীটি তিনটি অংশে বিভক্ত এবং নামও ভিন্নতর। নদীর উত্তরাংশ অর্থাৎ দিনাজপুরের অংশ দিনাজপুরের করতোয়া, মধ্যখানে আত্রাই এবং দক্ষিণের গাইবান্ধার নিকট আবার করতোয়া নাম ধারণ করেছে।

ছোট যমুনা নদী

এই নদীটি ভারতের জলপাইগুড়ি জেলা থেকে উৎপন্ন হয়ে বাংলাদেশের রংপুর গাইবান্ধা ও বগুড়ার পশ্চিমাংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নওগাঁর কাছে আত্রাই নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।

পুর্নভবা নদী

এই নদীটির অধিকাংশ ভারতের ভূ-খণ্ডে প্রবাহিত হয়ে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। নদীটি বাংলাদেশের প্রবেশ করে বরেন্দ্র এলাকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সবশেষে রাজশাহী জেলার মহানন্দা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।

ধাবলা ও দুধকুমার নদী

এই নদী দুটি উত্তর-পূর্ব দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে তিস্তা নদীর সমান্তরালে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে পতিত হয়েছে। দুটি নদীই ব্রহ্মপুত্রের উপনদী।

২। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বা গাঙ্গেয় নদী ব্যবস্থা (Southwest Region River System)

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অর্থাৎ খুলনা ও বরিশাল বিভাগ গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ এলাকার অন্তর্গত। গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব-দ্বীপ। অতীতে এ অঞ্চল বঙ্গোপসাগরের অংশ ছিল। কাল ক্রমে গঙ্গা বাহিত পলি দ্বারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভূমি গঠন ও নদী নালার সৃষ্টি হয়। এই নবগঠিত ভূ-ভাগে সুন্দরবন সৃষ্টি হয়। ভূমি গঠনের সাথে সাথে সুন্দরবন ও ক্রমান্বয়ে দক্ষিণ দিকে সম্প্রসারিত হয়েছে।

এই নদী ব্যবস্থার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নদী হল-গঙ্গা-পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ, গড়ায়, মধুমতি, পশুর ও রূপসা। নিম্নে নদী গুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-

গঙ্গা বা পদ্মা নদী

গঙ্গা নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫৬০ মাইল। নদীটির চীন, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। এই নদী ২৯ টি নগরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ভারতের হিমালয় পর্বতের গাঙ্গেত্রী হিমবাহ থেকে গঙ্গা বা পদ্মা নদীর উৎপত্তি হয়ে বাংলাদেশর রাজশাহী জেলার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের প্রবেশ করেছে। এই নদীটি ভারতের অংশে গঙ্গা এবং বাংলাদেশের অংশে পদ্মা নামে পরিচিত। তবে বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতে, গোয়ালন্দ পর্যন্ত গঙ্গা এবং গোয়ালন্দ থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত পদ্মা নদী হিসেবে গণ্য। চাঁদপুরের কাছে পদ্মা মেঘনায় পতিত হয়েছে।

বাংলাদেশের সীমানা থেকে ১৭.৭ কিলোমিটার দূরে ফারাক্কা নামক গ্রামের কাছে ১৯৭৫ সালের দিকে ভারত সরকার গঙ্গা নদীর উপর বাঁধ নির্মাণ করে যা ফারাক্কা বাঁধ নামে পরিচিত। এই বাঁধের মাধ্যমে ভারত সরকার ব্যাপক হারে পানি প্রত্যাহার করে নেয়। এর ফলে গঙ্গার বাংলাদেশের অংশে নাব্যতা হারায় যার ফলে, অনেক চরের সৃষ্টি হয়, এবং পদ্মার ওপর নির্ভরশীল পদ্মার শাখা নদী গুলো চরম নাব্যতা সংকটে পড়ে। এর ফলে গঙ্গা-পদ্মার পানির উপর নির্ভরশীল কৃষি ব্যবস্থায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমীর পদ্মা নদীর অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত হওয়ায় বাংলাদেশ বন্যার সৃষ্টি হয়। এর ফলে সবচেয়ে বেশি মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের পরিবেশের উপর।

কুমার ও আড়িয়াল খাঁ

ফরিদপুর শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে পদ্মা নদী থেকে প্রমান নদীর উৎপত্তি হয়। এই কুমার মাদারীপুরের শিবচরের নিকট আড়িয়াল খাঁ নদীতে পতিত হয়েছে। বিংশ শতাব্দীর পূর্বে এই নদী যথেষ্ট নাব্য ছিল। বর্তমানে কুমার একটি মৃতপ্রায় নদী।

গড়াই ও মধুমতি

গড়াই পদ্মা নদীর শাখা নদী। নদীটি কুষ্টিয়া শহরের কাছে পদ্মা থেকে উৎপত্তি হয়ে রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও নড়াইল জেলার সীমানা ঘেঁষে প্রবাহিত হয়েছে। মধুখালী উপজেলার পরে গিয়ে নদীটি তার নাম পরিবর্তন করে মধুমতি ধারন করে করেছে। এই নদীর সাথে মোল্লারহাট উপজেলার নিকটে কুমার, নবগঙ্গা ও চিত্রা নদী পতিত হয়েছে।

পশুর ও রুপসা নদী

এই নদী দুটি খুলনা এলাকার উল্লেখযোগ্য নদী। খুলনা শহরের দক্ষিণে ভৈরব নদী রূপসা নদী নামে পরিচিত। তবে কিছু দূরে গিয়ে আবার নাম পরিবর্তন করে পশুর নদী নাম ধারণ করেছে। মংলা বন্দরের নিকটে মংলানদী পশুর নদীর সাথে পতিত হয়েছে। এই নদী সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।

৩। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী ব্যবস্থা (Brahmaputra-Jamun River System)

ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী প্রায় ২৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ যা দেশের উত্তর প্রান্ত থেকে পদ্মা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। বাংলাদেশে প্রবেশ করার পূর্বে ব্রহ্মপুত্র নদ চীন ও ভারতের প্রায় ২৮৫০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়েছে। মানস সরোবর থেকে উৎপত্তি হয়ে চীনের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদী ভারতের অরুণাচল প্রদেশ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই নদীটি প্রধান পাঁচটি উপনদীর পানি গ্রহণ করে।

ওই পাঁচটি নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৪০ কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্র নদী তিস্তার সাথে যেখানে মিলিত হয়েছে, সেখান থেকে নদীটি যমুনা নামে পরিচিত। ১৭৮৭ সালের আসামের বন্যায় অর্থাৎ প্রায় ২০০ বছর পূর্বে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে ব্রহ্মপুত্র নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করে। এই নতুন গতিপথ যমুনা নদী নামে পরিচিত। উৎপত্তি পর থেকে আজ পর্যন্ত যমুনা নদী অনেক চরের সৃষ্টি করেছে তবে সেখানে কোন স্থায়ী বসতি গড়ে ওঠেনি।

৪। সুরমা-মেঘনা নদী ব্যবস্থা (Surma-Meghna River System)

সুরমা-মেঘনা নদী ব্যবস্থা বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের ভারতের সীমান্ত থেকে চাঁদপুরে পদ্মার সাথে মিলিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চল এই নদী ব্যবস্থার অন্তর্গত। প্রধানত সুরমা, কুশিয়ার ও মেঘনা এবং এদের শাখা ও উপনদী নিয়ে এই নদী ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

ভারতের আসাম প্রদেশের বরাক নদী বাংলাদেশের সিলেট জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে সুরমা নদী নাম ধারণ করেছে। আবার ভারতের মিজোরাম প্রদেশের পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে একটি নদী বাংলাদেশের সিলেট জেলার করিমগঞ্জের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের প্রবেশ করেছে যার নাম কুশিয়ার।

সুরমা-মেঘনা নদী বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৬৯ কিলোমিটার। মূলত; কালনি, সুরমা-কুশিয়ারা ও খেয়াই নদীর মিলিত স্রোতই মেঘনা নদী। এই নদী ব্যবস্থার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নদী হল গোমতী, ফেনী ও ডাকাতিয়া। গোমতী নদী কুমিল্লা দাউদকান্দির মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মেঘনায় পতিত হয়েছে।

৫। পাহাড়ী নদী ব্যবস্থা (Hillstax River System)

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার নদীগুলো যে নদী ব্যবস্থার সৃষ্টি করেছে তাকে সম্মিলিতভাবে পাহাড়ী নদী ব্যবস্থা বলা হয়। কর্ণফুলী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, হালদা, কাশালং, নাফ প্রভৃতি এই এলাকার অন্যতম নদী। এ অঞ্চলের নদীগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো খরস্রোত সম্পন্ন এবং অপ্রসস্থ। পাহাড়ি নদী হিসেবে কর্ণফুলী একটি অতিপরিচিত নদী। নদীটি ভারতের পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে পতেঙ্গা হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। উৎপত্তিস্থল থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭২ কিলোমিটার। সাঙ্গু নদী বান্দরবানের মউডাক পর্বতমালাই উৎপত্তি হয়ে প্রায় ২৪৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।

নাফ একটি সীমান্ত নদী। এটি বাংলাদেশের কক্সবাজার ও টেকনাফ এবং মায়ানমারের মধ্যে সীমানা নির্দেশ করে। মাতামুহুরী বান্দরবানের মাইনভার পর্বত এবং হালদা খাগড়াছড়ির বদনাতলী পর্বতে উৎপত্তি হয়ে পাহাড়ী এলাকা অতিক্রম করে যথাক্রমে মহেশখালী খাল ও কর্ণফুলী নদীতে পতিত হয়েছে। চট্টগ্রামের সমুদ্র বন্দর কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত। এই নদী ব্যবস্থার মধ্যে কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও কাপ্তাই বাঁধ অবস্থিত।

মন্তব্য

আজকের এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থার বিস্তারিত বর্ণনা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে আশা করছি বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থা সম্পর্কিত তথ্য পরিপূর্ণভাবে প্রদান করতে সক্ষম হয়েছি। বিস্তারিত ভালোভাবে আয়ত্ত করার জন্য বারবার মনোযোগের সহিত পড়ুন বিষয়টি ক্লিয়ার হয়ে যাবে। এতক্ষণ ধরে এই প্রতিবেদনটি গুরুত্ব সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Hasi Online IT নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url